- ব্যক্তি করদাতারা এক লাখ টাকার ওপর ৫ শতাংশ করহার ২০২৫-২৬ করবর্ষে আরোপ করার সুযোগ পাবেন।
- ২০২৬-২৭ করবর্ষ থেকে এই এক লাখ টাকার ওপর ৫ শতাংশের এই হার আর থাকবে না
ধরা যাক, মাহবুব তাঁর নিয়োগকর্তার কাছ থেকে বছরে মোট ১৫ লাখ টাকা বেতন পান। এর বাইরে তিনি স্থায়ী আমানত বা ফিক্সড ডিপোজিট থেকে বছরে সুদ বাবদ দুই লাখ টাকা পান। এ ছাড়া সঞ্চয়পত্র থেকে বছরে মুনাফা বাবদ পান আরও এক লাখ টাকা। সুদ বাবদ প্রাপ্ত আয়কে আর্থিক পরিসম্পদ থেকে আয় হিসাবে বিবেচনা করা হয়। আর স্থায়ী আমানত থেকে প্রাপ্ত আয় ন্যূনতম করের উৎস হতে আয় এবং সঞ্চয়পত্র থেকে প্রাপ্ত আয় চূড়ান্ত করের উৎস হতে আয় হিসাবে বিবেচিত।
এখন দেখা যাক, এক করবর্ষে মাহবুবের আয় কত ছিল। প্রাপ্ত হিসাবে দেখা যাচ্ছে মাহবুব এক করবর্ষে মোট আয় করেছে ১৮ লাখ টাকা। ধরা যাক, এই আয় তিনি করেছেন ২০২৪-২৫ করবর্ষে। এই করবর্ষে বেতনখাতে তাঁর কর অব্যাহতি প্রাপ্ত আয়সীমা ছিল সাড়ে ৪ লাখ টাকা। সেই হিসাবে মাহবুবের মোট করযোগ্য আয় দাঁড়ায় সাড়ে ১৩ লাখ টাকা। ২০২৫-২৬ করবর্ষে মাহবুবের আয় যদি একই থাকে, তাহলে তাঁর মোট করযোগ্য আয় দাঁড়াবে ১৩ লাখ টাকায়। কারণ, করমুক্ত আয়ের সীমা সাড়ে ৪ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫ লাখ টাকা করা হয়েছে। আগামী ২০২৫–২৬ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণাকালে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বেতনখাতে করমুক্ত আয়সীমা ৫০ হাজার টাকা বাড়ানোর কথা জানিয়েছেন।
নিয়ম অনুযায়ী, মাহবুব চূড়ান্ত করের উৎস হতে আয় বাদে ন্যূনতম করের উৎস থেকে আয়সহ মোট আয়ের ওপর কর রেয়াত দাবি করার যোগ্য হবেন, যা পূর্ববর্তী করবর্ষে রেয়াতযোগ্য ছিল না। এর অর্থ হলো গত বছর ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকার ওপর ৩ শতাংশ কর রেয়াত দাবি করা যেত। কিন্তু এই করবর্ষে ১২ লাখ টাকার ওপর ৩ শতাংশ কর রেয়াত দাবি করা যাবে। অতিরিক্ত কর রেয়াত এখন সাড়ে ৪ হাজার টাকা হবে। এই ধরনের কর রেয়াত দাবি করার জন্য মাহবুবকে আয়কর আইন অনুযায়ী বিনিয়োগযোগ্য ক্ষেত্রগুলোতে অন্তত ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করতে হবে। জনপ্রিয় বিনিয়োগ ক্ষেত্রগুলোর মধ্যে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত যেকোনো সরকারি সিকিউরিটিজ (সঞ্চয়পত্র, ট্রেজারি বিল, বন্ড), জীবন বিমা প্রিমিয়াম, সম্পদ ব্যবস্থাপক বা অ্যাসেট ম্যানেজার পরিচালিত ইউনিট সার্টিফিকেট এবং মিউচুয়াল ফান্ডে ৫ লাখ টাকা বিনিয়োগ, অনুমোদিত প্রভিডেন্ট ফান্ডে করদাতা এবং প্রতিষ্ঠানের চাঁদা, তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ ইত্যাদি। সুতরাং করভার কমাতে হলে ৩০ জুনের মধ্যে বিনিয়োগযোগ্য ক্ষেত্রগুলোতে বিনিয়োগ করতে হবে। ৩০ জুনের পর বিনিয়োগ করলে এই করবর্ষে বিনিয়োগের বিপরীতে রেয়াতি সুবিধা পাওয়া যাবে না।
- স্নেহাশীষ বড়ুয়া, কর পরামর্শক
লেখক: এসএমএসি অ্যাডভাইজরি সার্ভিসেসের পরিচালক ও সনদপ্রাপ্ত হিসাববিদ