প্রতিবছর ১ জুলাই থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ব্যক্তিশ্রেণির করদাতারা আয়কর রিটার্ন জমা দিতে পারেন। এ বছর জমার সময়সীমা বাড়িয়ে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে। আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার পর যদি ফাইলে কোনো ত্রুটি থেকে যায়, তাহলে ভবিষ্যতে সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন। তাই শুরু থেকেই সচেতন হয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুছিয়ে আয়কর রিটার্ন প্রস্তুত করাই বুদ্ধিমানের কাজ।
আয়কর রিটার্ন জমার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
রিটার্ন তৈরির জন্য যে কাগজপত্রগুলো প্রয়োজন, সেগুলো সঠিকভাবে গুছিয়ে নিলে ঝামেলা এড়ানো যায়। নিচে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের জন্য দরকারি কাগজপত্রের তালিকা দেওয়া হলো:
আয়ের বিবরণী
১. বেতন খাতের আয়: বেতন সংক্রান্ত সনদ।
২. গৃহ সম্পত্তি খাতের আয়: গৃহের তলাভিত্তিক ফ্লোর স্পেস ও ভাড়া (ভাড়ার চুক্তিপত্র)। পৌরকর প্রদানের রসিদ।
বন্ধকি ঋণের সুদ সংক্রান্ত ব্যাংকের বিবরণী বা সার্টিফিকেট। বাসস্থান খালি থাকার ক্ষেত্রে সময়কাল (উপ-কর কমিশনারের কাছে জমা দেওয়া পত্রের কপি)।
৩. কৃষি আয়: কৃষিজমির পরিমাণ। উৎপাদিত শস্যের পরিমাণ ও বাজারমূল্য।
৪. ব্যবসা বা পেশা খাতের আয়: যদি থাকে, তবে আয়-ব্যয়ের বিবরণী ও স্থিতিপত্র।
৫. মূলধনি লাভ: বিক্রয়মূল্য সংক্রান্ত চুক্তিপত্র ও রসিদ। ক্রয়মূল্যের দলিল বা প্রমাণপত্র। আনুষঙ্গিক মূলধনি ব্যয়ের প্রমাণপত্র।
৬. আর্থিক পরিসম্পদ থেকে আয়: লভ্যাংশ।ব্যাংকের সুদ বা মুনাফা। সঞ্চয়পত্র বা এফডিআরের মুনাফা।
৭. অন্যান্য উৎস থেকে আয়: প্রাসঙ্গিক প্রমাণপত্র।
কর রেয়াতের জন্য বিনিয়োগের কাগজপত্র
১. জীবন বীমার প্রিমিয়ামের রসিদ।
২. ভবিষ্য তহবিলে প্রদত্ত চাঁদার সার্টিফিকেট।
৩. ডিপোজিট পেনশন স্কিমে (ডিপিএস) প্রদত্ত চাঁদার ব্যাংক সার্টিফিকেট (সর্বোচ্চ ১,২০,০০০ টাকা পর্যন্ত)।
৪. স্বীকৃত ভবিষ্য তহবিলে স্বীয় ও নিয়োগকর্তার প্রদত্ত চাঁদার কপি।
৫. জাকাত তহবিল ও কল্যাণ তহবিলে প্রদত্ত চাঁদার প্রমাণপত্র।
রিটার্ন জমা দেওয়ার পরবর্তী প্রক্রিয়া
রিটার্ন জমা দেওয়ার আগে সব কাগজপত্র সঠিকভাবে যাচাই করুন। রিটার্ন ফাইলে স্বাক্ষর করুন এবং জমার আগে ফটোকপি রেখে দিন। অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করলেও মূল কপি সংরক্ষণ করুন।
পরামর্শ
যদি আয়কর ফাইল অডিটে নির্বাচিত হয়, তাহলে এই প্রস্তুত কাগজপত্র পরবর্তী কার্যক্রম সহজ করবে। তাই সঠিকভাবে আয়কর রিটার্ন জমা দিন এবং নিজেকে আর্থিক ঝুঁকিমুক্ত রাখুন।